২২ অক্টোবর, ২০২৫

কোম্পানী আত্মসাৎ, উর্ধ্বতন কর্মকর্তার স্বার্থান্বেষী আচরণ, প্রাণ ভয়ে দেশ ছাড়ার অভিযোগ

অনলাইন ডেস্ক

কোম্পানী আত্মসাৎ, উর্ধ্বতন কর্মকর্তার স্বার্থান্বেষী আচরণ, প্রাণ ভয়ে দেশ ছাড়ার অভিযোগ

16px

নিউজ ডেস্ক: সরকার পরিবর্তনের পর সুযোগ সন্ধানী ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের অন্যায় প্রভাবের কারণে অনেকেই অসহায়। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দেশের আইন শৃংখলা পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক হয়ে পড়ে। সরকার বাধ্য হয়ে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসী ক্ষমতা দেয় কিন্তু বর্তমান ও সাবেক কিছু কর্মকর্তা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিলের অপচেষ্ঠায় লিপ্ত হয়। এমনই গুরুতর অভিযোগ উঠে সাবেক এক সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সরেজমিন তদন্তে প্রকাশ ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ থানার অন্তর্গত হাসনাবাদ এলাকায় অবস্থিত স্বনামধন্য ও সু-পরিচিত বস্ত্র কারখানা রিভারসাইড সোয়েটার কোম্পানীর অংশীদার ছিলেন অবঃপ্রাপ্ত সাবেক মেজর মোহাম্মদ আখতার হোসেন। বর্তমান সেনা প্রধান তার বেজমেট, ঘনিষ্ঠ বন্ধু হওয়ায় লাভজনক এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আত্মসাতের জন্য হুমকি, মিথ্যা মামলা দায়ের কোম্পানীর মূল মালিক মর্তুজা আলীকে গ্রেফতার করানো এবং উক্ত কোম্পানীর জেনারেল ম্যানেজার (মার্চেন্টাইজিং) যিনি মর্তুজা আলী আপন সহোদয় ভ্রাতাকে হত্যা করার হুমকি আর মিথ্যা মামলা করিয়ে দেশত্যাগ করতে বাধ্য করেন। তদন্তের বিস্তারিত বিবরণে জানা যায় ২০০৭ইং সালে বনালোকাঠির বাসিন্দা মর্তুজা আলী কোম্পানী ক্রয় করে মালিকানা গ্রহণ করেন। তখন মর্তুজা আলীর তৎকালীন ঘনিষ্ঠ বন্ধু অবসর প্রাপ্ত মেজর মোহাম্মদ আখতার হোসেনকে ২৫ শতাংশ মালিকানা প্রদান করেন মর্তুজা আলী।

বিগত ০৫ই আগষ্ট ২০২৪ইং সালে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর সেনা প্রধানকে ম্যানেজ করে লাভ জনক ও ক্রমবর্ধমান এই কোম্পানীকে আত্মসাতের হীন অপপ্রয়াসে লিফ হয়ে এক সময়ের বন্ধু কোম্পানীর মূল মালিক জনাব মর্তুজা আলীকে মামলার ফাদে ফেলে কোম্পানীর মালিকানা দখলের পরিকল্পনা করেন অবঃ প্রাঃ মেজর মোহাম্মদ আখতার হোসেন। একজন বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী হিসাবে তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকারের বিভিন্ন স্তরের নেতা ও প্রশাসনের আমলাদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও যাওয়া আসা ছিল মর্তুজা আলীর। এই সুযোগকে কাজে লাগান মেজর মোহাম্মদ আখতার হোসেন। তার পরিকল্পনা আর নীল নকশায় মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করানো হয় মর্তুজা আলীকে। মর্তুজা আলীর সহোদয় ভ্রাতা রিভার সাইড সোয়েটার কোম্পানীর জি.এম (মার্চেন্টাইজ) কে বরখাস্ত সহ মর্তুজা আলী এবং মোঃ মিজানুর রহমানের সাথে ঘনিষ্ঠ কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে বরখাস্ত করে সেনা প্রধানের প্রভাব ও ছত্র ছায়ায় কোম্পানীর একচ্ছত্র মালিক হয়ে যান মেজর মোহাম্মদ আখতার হোসেন। মর্তুজা আলীর সহোদয় ভাই মিজানুর রহমান কোম্পানীর মালিকানা উদ্ধারের চেষ্ঠা করলে তাকেও হত্যা মামলা সহ অন্যান্য মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে বিভিন্ন ভাবে তাকে হুমকি, তার স্ত্রীকে ও সন্তানদের অপহরনের হুমকি দেয়া হয়। অত্যন্ত সু-কৌশলে কোম্পানী গ্রাস করে নেন মেজর মোহাম্মদ আখতার হোসেন। প্রতিবেদক এর অনুসন্ধানে হাসনাবাদ রিভার সাইড সোয়েটার কোম্পানীতে গেলে কর্মচারী, কর্মকর্তারা মালিকানার বিষয় মুখ খুলতে রাজী হননি।পুরোনো কিছু কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দেশেল পট পরিবর্তনের সুযোগে প্রশাসনিক ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে মাত্র ২৫ শতাংশের মালিক অবঃ প্রাঃ মেজর মোহাম্মদ আখতার হোসেন কোম্পানী জবর দখল করেন। হাসনাবাদ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানান, কোম্পানীর মুল মালিক জনাব মর্তুজা আলী, আমরা যতটুকু জানি কিছু অংশের মালিক মেজর মোহাম্মদ আখতার হোসেন এর সাথে সেনা প্রধান সহ সেনাবাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের যোগাযোগ আছে। প্রশাসনিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি এই কোম্পানী দখল করেন।

মর্তুজা আলী ও মোঃ মিজানুর রহমানের পরিবারের সদস্যদের দাবী বর্তমানে তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছেন। ঘটনার জন্য আইনী পদক্ষেপ নিতে তারা সাহস পাচ্ছেন না। এজন্য তারা বিচার বিভাগীয় হস্তক্ষেপ কামনা করেন। অভিযোগের বিষয়ে মেজর মোহাম্মদ আখতার হোসেন এবং তার সাথে সংশ্লিষ্ট কিছু সেনা কর্মকর্তার সাথে কথা বলতে চাইলে তারা ধমকের সুরে প্রত্যাখান করেন। মোঃ মিজানুর রহমানের পরিবারের সদস্যরা জানান, আমরা জানতে পেরেছি মর্তুজা আলীকে এবং মোঃ মিজানুর রহমানকে ছাত্র হত্যা মামলার আসামী করা হয়েছে এবং ঝালোকাঠিতে সংঘটিত একটি হত্যাকন্ডের জন্য মোঃ মিজানুর রহমানকে ১নং আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সব কিছুর নেপথ্যে কোম্পানী দখলকারী অবঃ প্রাঃ মেজর আখতার হোসেনের হাত রয়েছে। মোঃ মিজানুর রহমান নিজের ও স্ত্রী, সন্তানের নিরাপত্তার জন্য দেশ ছেড়ে ইউরোপের একটি দেশে আশ্রয় প্রার্থী। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত করার জন্য দাবী করেন।

ঘটনার মূল রহস্য এই প্রতিবেদকের নিকট অনেকটাই স্পষ্ট হলেও এই বিষয়ে অভিযোগ দায়ের তার এখতিয়ার বহির্ভূত। তবে সত্য উন্মোচন করা সহ বিশেষজ্ঞ মহল, মানবতাশীল কর্মী ও প্রশাসনের নিরপেক্ষ ব্যক্তি ও সুশীল সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য প্রতিবেদন প্রকাশ অনিবার্য্য ছিল। সঠিক মালিকানা নির্ণয় সহ সব বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সকলের এগিয়ে আসা উচিত।

এই বিভাগের আরও খবর

dainikamarbangla

সর্বশেষ খবর

হাইলাইটস

বিশেষ সংবাদ